০৭:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ সময়ের দাবী

মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক সমাজ আজ বঞ্চনার শিকার। এমপিওভুক্ত সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীদের তাঁদের ন্যায্য পাওনা আদায়ের লক্ষ্যে বারবার রাস্তায় নামতে হচ্ছে বা আন্দোলন করতে হচ্ছে।
মুজিববর্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লালিত স্বপ্ন সবার জন্য শিক্ষায় সমান সুযোগ  সৃষ্টি বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করার মাধ্যমে করে দিবেন তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এমনটাই মনে করেন বেসরকারি সকল শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীরা। বর্তমান সরকার বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন করে বিশ্বের কাছে আজকে রোল মডেল৷ এই সরকারের উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান।
দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’,নিজস্ব অর্থে পদ্মার ওপর ৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু,এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র,এ ছাড়া মেট্রোরেল, এলিভেটেট এক্সপ্রেসহ আরো কিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার।
এই  সরকারের সময়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ক্রীড়া, পরিবেশ, কৃষি, খাদ্য, টেলিযোগাযোগ, সংস্কৃতি, সামাজিক নিরাপত্তা, মানবসম্পদ উন্নয়ন এমন কোনো খাত নেই যে খাতে অগ্রগতি সাধিত হয়নি। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে গত কয়েক বছরে দেশে অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, পুষ্টি, মাতৃত্ব এবং শিশু স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। যা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রশংসিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও।
কথিত তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ আজ ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি খাদ্য, বস্ত্র-চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ সবকিছুই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে।
এত কিছুর উন্নয়ন হলেও আজও জাতীয়করণ হয়নি বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সরকারি ও বেসরকারি ছাড়া ও বহুধা বিভক্ত । বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী সরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার সংখ্যা হচ্ছে মাত্র ২% এবং বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার সংখ্যা হলো ৯৮%।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ শুধুমাত্র মূল বেতন ও নামমাত্র সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন।
বাড়ি ভাতা ১০০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা, উৎসব ভাতা সরকারি চাকরিজীবীদের চারভাগের একভাগ। ৫% ইনক্রিমেন্ট এবং বৈশাখী ভাতা গতবছর থেকে যোগ হয়েছে৷ সময় মতো পাচ্ছেন না টাইমস্কেল। অবসর ভাতার এবং কল্যাণ ট্রাষ্টের টাকাও পাচ্ছেন না সঠিক মতো। যার কারনে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু,মানবেতর জীবনযাপন এমন খবর দেখতে
হচ্ছে প্রতিনিয়ত৷
অন্যদিকে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা ৫% বার্ষিক প্রবৃদ্ধি, মূল বেতনের ৪৫% বাড়িভাতা, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা, ১০০% উৎসব ভাতা, ২০% বৈশাখী ভাতা ,যাতায়াত ভাতা ,শ্রান্তি বিনোদন ভাতা, ভ্রমন ভাতা, স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ ,আবাসন সুবিধা,পেনশন সহ সরকারের দেয়া সকল সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের মাধ্যমে দেশের সকল মানুষকে বৈষম্যহীন শিক্ষা উপহার দেওয়া সম্ভব। একদিকে যেমন গ্রামের দারিদ্র্য ছাত্রছাত্রীদের বেতন দিতে হবে না তেমনি অন্য দিকে সকল শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীগণ আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন।
জাতীয়করণ হলে আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন সরকারও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কোষাগারে আছে কোটি কোটি টাকা। এই সব টাকা সরকারি কোষাগারে নিয়ে আশা করি জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার মুজিববর্ষেই জাতীয়করণ ঘোষণা করবেন।

লেখক,
মোঃ আরিফুজ্জামান
সহকারি শিক্ষক,
শালথী উচ্চ বিদ্যালয় পূর্বধলা, নেত্রকোনা।

জনপ্রিয় সংবাদ

বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ সময়ের দাবী

প্রকাশ : ০৯:১৫:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জুলাই ২০২০

মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক সমাজ আজ বঞ্চনার শিকার। এমপিওভুক্ত সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীদের তাঁদের ন্যায্য পাওনা আদায়ের লক্ষ্যে বারবার রাস্তায় নামতে হচ্ছে বা আন্দোলন করতে হচ্ছে।
মুজিববর্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লালিত স্বপ্ন সবার জন্য শিক্ষায় সমান সুযোগ  সৃষ্টি বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করার মাধ্যমে করে দিবেন তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এমনটাই মনে করেন বেসরকারি সকল শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীরা। বর্তমান সরকার বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন করে বিশ্বের কাছে আজকে রোল মডেল৷ এই সরকারের উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান।
দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’,নিজস্ব অর্থে পদ্মার ওপর ৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু,এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র,এ ছাড়া মেট্রোরেল, এলিভেটেট এক্সপ্রেসহ আরো কিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার।
এই  সরকারের সময়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ক্রীড়া, পরিবেশ, কৃষি, খাদ্য, টেলিযোগাযোগ, সংস্কৃতি, সামাজিক নিরাপত্তা, মানবসম্পদ উন্নয়ন এমন কোনো খাত নেই যে খাতে অগ্রগতি সাধিত হয়নি। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে গত কয়েক বছরে দেশে অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, পুষ্টি, মাতৃত্ব এবং শিশু স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। যা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রশংসিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও।
কথিত তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ আজ ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি খাদ্য, বস্ত্র-চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ সবকিছুই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে।
এত কিছুর উন্নয়ন হলেও আজও জাতীয়করণ হয়নি বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সরকারি ও বেসরকারি ছাড়া ও বহুধা বিভক্ত । বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী সরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার সংখ্যা হচ্ছে মাত্র ২% এবং বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার সংখ্যা হলো ৯৮%।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ শুধুমাত্র মূল বেতন ও নামমাত্র সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন।
বাড়ি ভাতা ১০০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা, উৎসব ভাতা সরকারি চাকরিজীবীদের চারভাগের একভাগ। ৫% ইনক্রিমেন্ট এবং বৈশাখী ভাতা গতবছর থেকে যোগ হয়েছে৷ সময় মতো পাচ্ছেন না টাইমস্কেল। অবসর ভাতার এবং কল্যাণ ট্রাষ্টের টাকাও পাচ্ছেন না সঠিক মতো। যার কারনে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু,মানবেতর জীবনযাপন এমন খবর দেখতে
হচ্ছে প্রতিনিয়ত৷
অন্যদিকে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা ৫% বার্ষিক প্রবৃদ্ধি, মূল বেতনের ৪৫% বাড়িভাতা, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা, ১০০% উৎসব ভাতা, ২০% বৈশাখী ভাতা ,যাতায়াত ভাতা ,শ্রান্তি বিনোদন ভাতা, ভ্রমন ভাতা, স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ ,আবাসন সুবিধা,পেনশন সহ সরকারের দেয়া সকল সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের মাধ্যমে দেশের সকল মানুষকে বৈষম্যহীন শিক্ষা উপহার দেওয়া সম্ভব। একদিকে যেমন গ্রামের দারিদ্র্য ছাত্রছাত্রীদের বেতন দিতে হবে না তেমনি অন্য দিকে সকল শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীগণ আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন।
জাতীয়করণ হলে আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন সরকারও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কোষাগারে আছে কোটি কোটি টাকা। এই সব টাকা সরকারি কোষাগারে নিয়ে আশা করি জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার মুজিববর্ষেই জাতীয়করণ ঘোষণা করবেন।

লেখক,
মোঃ আরিফুজ্জামান
সহকারি শিক্ষক,
শালথী উচ্চ বিদ্যালয় পূর্বধলা, নেত্রকোনা।